ফুটোর মাপ
পনেরো বছর আগে যখন পাঞ্জাবে খালিস্তানী উগ্রপন্থীদের রমরমা। রোজই তাদের সঙ্গে পাঞ্জাব পুলিশের ‘মুঠভেড়’ হচ্ছে। মারা পড়ছে দুই পক্ষের সঙ্গে নিরীহ মানুষজনও। খালিস্থানীরা তাদের উগ্রপন্থী আন্দোলন জারী রাখার জন্যে ব্যাঙ্ক ইত্যাদি তো লুট করছেই – বাদ যাচ্ছে না সাধারন লোকের সম্পত্তিও।
এই পরিস্থিতিতে বলবীর সিং এর বড় মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে পাশের গ্রামেই। বলবীর থাকে জলন্ধর থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে বার্ণালা গ্রামে। সম্পন্ন চাষী।
মেয়ে সতবীরকে ট্রাক্টরে চাপিয়ে ট্রেলার নিয়ে বলবীর চলেছে জলন্ধরে – পুরোন গয়না কিছু নতুন ডিজাইনে বানাতে হবে আর নতুন গয়নাও কিছু কিনতে হবে – এছাড়াও অন্যান্য কিছু আনা তো আছেই।
কিছু দূর যাওয়ার পরেই বলবীর আর তার মেয়ে পড়বি তো পড় পড়ল খালিস্তানী উগ্রপন্থীদের হাতেই। যথারীতি বলবীরের সর্বস্ব তো গেলোই – উগ্রপন্থীরা ট্রাক্টর-ট্রেলারটাও নিল কেড়ে। কপাল ভালো মেয়েটাকে কিছু করে নি – এই কথা ভেবে বেচারা বলবীর তার মনকে সান্ত্বনা দিলো।
তা সে আর কতক্ষণ _ সব চলে গেলো এবার মেয়ের বিয়ে কি ভাবে দেবে সে কথা মনে করে বলবীর হাপুস নয়নে কাঁদতে লাগলো।
- ওয় পাপা ! রোইয়ে মত । আমি আমার গয়না তোমার টাকা সব বাঁচিয়েছি হারামজাদা উগ্রপন্থীদের হাত থেকে !
কি করে শুনি ?
আসলে হয়েছে কি এ রকম একটা কিছু হতে পারে মনে করে আমি আজ প্যান্টিই পরি নি। সব ‘ঐখানে’ চট করে ঢুকিয়ে নিয়েছি।
এ কথা শুনে বলবীর আবার আছাড়ি-পিছাড়ি করে কাঁদতে লাগল।
ওয় পাপা ! রোইয়ে মত । ফির ক্যা হুয়া ? তোমার সব কিছুই তো ঠিক আছে !
ওয়, পুত্তর ! তোর মা কত বার আসতে চেয়েছিল । উগ্রপন্থীদের ভয়ে আনলাম না রে । হায় ! হায় !
কেন তাতে কি হলো আবার ?
ওয়, সতবীরা ! হায় ! হায় ! তোর মা’কে আনলে আজ আমার ট্রাক্টর আর ট্রেলার দুটোই বেঁচে যেতো । কি গাধা আমি।
No comments:
Post a Comment